Pratiswik
  • হোম
  • লেখকসূচি
  • কবিতা
  • কথাসাহিত্য
    • গল্প
    • উপন্যাস
  • নাটক
  • প্রবন্ধ
  • বইকথা
  • গদ্য
    • মুক্তগদ্য
    • অন্যগদ্য
  • অনুবাদ
  • চলচ্চিত্র
  • চিত্রকলা
  • সাক্ষাৎকার
  • অনূর্ধ্ব ২৭
  • বিশেষ সংখ্যা
  • সাহিত্য সংবাদ
কিছু পাওয়া যায়নি
সব লেখা দেখুন
  • হোম
  • লেখকসূচি
  • কবিতা
  • কথাসাহিত্য
    • গল্প
    • উপন্যাস
  • নাটক
  • প্রবন্ধ
  • বইকথা
  • গদ্য
    • মুক্তগদ্য
    • অন্যগদ্য
  • অনুবাদ
  • চলচ্চিত্র
  • চিত্রকলা
  • সাক্ষাৎকার
  • অনূর্ধ্ব ২৭
  • বিশেষ সংখ্যা
  • সাহিত্য সংবাদ
কিছু পাওয়া যায়নি
সব লেখা দেখুন
Pratiswik
কিছু পাওয়া যায়নি
সব লেখা দেখুন
OneHost BD
হোম বইকথা
ঢোঁড়াই চরিত মানস : প্রান্তিক মানুষের জীবনালেখ্য ও অধিকার-সচেতনার গল্প

ঢোঁড়াই চরিত মানস : প্রান্তিক মানুষের জীবনালেখ্য ও অধিকার-সচেতনার গল্প

সাফি উল্লাহ্ সাফি উল্লাহ্
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
বিভাগ : বইকথা
7.2k
Views
ফেসবুকটুইটারহুয়ার্ট্সঅ্যাপলিংকইন্ডই-মেইল

জীবন অন্বেষী ভারতীয় ঔপন্যাসিক সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫) রচিত অল্প-পঠিত অথচ বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলীতে অনন্য উপন্যাস ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ মূলত নিম্নবর্গ ও প্রান্তিক মানুষের জীবনালেখ্য। ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন্যাসটি বহুমাত্রিক, এখানে রয়েছে প্রান্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি, রয়েছে তাদের অধিকার ও রাজনীতি সচেতনতার বয়ান। ঔপন্যাসিক সতীনাথ ভাদুড়ী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অসংখ্য লোক কবিতা ও প্রবাদের সুষম ব্যবহার ঘটিয়েছেন, যার ফলে উপন্যাসটি সত্যিকারের জীবনালেখ্য হয়ে উঠেছে। উপন্যাসে ঢোঁড়াইয়ের ঢোঁড়াই থেকে রামায়ণজী হয়ে ওঠা, তুই থেকে আপনি হয়ে ওঠার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে সবিস্তারে।

শিক্ষা, সভ্যতা ও আধুনিকতার আলো এখনো পূর্ণভাবে পৌঁছায়নি, এমন অঞ্চলের ঘটনাকে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে এ উপন্যাসটি। এমন এক সমাজের বর্ণনা এসেছে যেখানে শরীরে শক্তি থাকলে টাকা উপার্জন করা যায়, এমন এক সংস্কৃতির কথা এসেছে যেখানে, যে হাকিম ও পুলিশের সাথে কথা বলতে পারে ও টাকা কিংবা জমি আছে, তারা জাতির নেতৃত্বে এগিয়ে আসে। আবার আরো বেশি প্রভাবশালীর আগমনে নেতৃত্ব যায় নবাগতের কাছে। সেই তখন সমাজের মহোতা বা নেতা হয়ে ওঠে। এখানে ক্ষুধা নিবারণই মূল লক্ষ্য, এ কারণে পুরুষ নারী সকলকেই কাজ করতে হয়। শিক্ষা-দীক্ষা এদের কাছে বিলাসিতা, বড়োলোকদের বিষয়। এই প্রান্তিক মানুষদের জাত্যাভিমান প্রবল। তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্নতাও প্রকট। তবে কুসংস্কারের মাঝে তারা মূলত বেঁচে থাকার রশদ খোঁজে, কখনো কখনো এই কুসংস্কার হয় ওঠে শোষণের হাতিয়ার।

তাৎমাটুলি, কোয়েরীটোলা ও সাঁওতালটোলার গল্পের মাঝে উপন্যাসটি সীমাবদ্ধ নয়, শুধু নিম্নবর্ণের জীবনকাহিনির ভেতরেও সীমাবদ্ধ নয়, বরং উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় উঠে এসেছে জীবন সংগ্রামের কাহিনি, ক্ষমতার দাপট এবং একই সাথে ভারতে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে সুবিধাভোগী জোতদার শ্রেণি ও মুক্তিকামী নিম্নবর্গের ভূমিকা উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের চিত্রও উঠে এসেছে ভিন্ন মাত্রায়।

‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন্যাসটির শুরু জিরানিয়া, তাৎমাটুলি ও ধাঙরটুলির বিবরণ দিয়ে। ঢোঁড়াইয়ের বাল্যজীবন, পিতৃমৃত্যু, মায়ের দ্বিতীয় বিবাহ এবং বোকা বাওয়ার নিকট লালিতপালিত হওয়ার আলোচনা দিয়ে উপন্যাসের অগ্রগতি শুরু হয়েছে। ঢোঁড়াইয়ের মা চাপরাশি বাবুলালের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়, তবে তার দাবি সে তার স্ত্রীর পূর্বের সন্তানকে দেখার দায়িত্ব নিতে পারবে না। ঢোঁড়াইকে রেখে যায় ভিখারি বেওয়ার কাছে। পূজোর থানে। এখানেই বড়ো হতে থাকে, আর সময় কাটে দুরন্তপনায় এবং বেওয়ার ভিখারী-সঙ্গী হয়ে। ধীরে ধীরে বড়ো হয়। পঞ্চ বসে। পঞ্চই সমাজেররর সব, জাতির সব। এদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

বাওয়া ভিক্ষা করতে গিয়ে গুলি লাগে পায়ে। সেখান থেকে জরিমানা হিসেবে সাড়ে তিনশো টাকা পায়, হিসাবটা করে কুড়ি দিয়ে। অনেক কুড়ি টাকা পায়। গোরুর গাড়ি কিনে ঢোঁড়াই, বিয়ে করে পশ্চিমা মেয়ে রামিয়াকে। সদ্য মোচ গজিয়েছে, এর আগে কাজ করেছে পাক্কিতে, রাস্তা মেরামতের কাজ। জাতের নাকে চুনকালি লাগানোর অজুহাতে কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি তাকে। এখন রোজগারে ঢোঁড়াই তাৎমাটুলির গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তার মায়ের বর্তমান স্বামী বাবুলাল চাপরাশী পর্যন্ত তাকে তোয়াজ করে চলে। ঢোঁড়াইয়ের মতো একজন মানুষকে যখন কেউ গুরুত্ব দেয়, সেটা হোক নিজের বা জাতের মাঝে কিংবা রাজনৈতিক দলের, তখন সে আরও মন দিয়ে কাজ করতে শুরু করে। ‘বলন্টিয়াররা হঠাৎ ঢোঁড়াইকে আপনি বলে কথা বলতে আরম্ভ করে…এ একটা নতুন অভিজ্ঞতা ঢোঁড়াইয়ের জীবনে।’

এমন ঘটনাবহুল উপন্যাস ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’। উপন্যাসে ঢোঁড়াইয়ের জন্ম থেকে শুরু হয়েছে, আলোচনা এসেছে অনেকগুলো টানাপোড়েন। তার গর্ভবতী স্ত্রী রামিয়ার সামুয়রের সাথে রাত অবধি গল্প করে, এই গল্পে মাত্রা বাড়তে থাকে। একদিন প্রহার করে। সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, সামুয়র রামিয়াকে বিয়ে করতে চায়। লজ্জ্বায় গ্রাম ছেড়ে পাক্কি ধরে হাঁটতে হাঁটতে বহুদূর চলে যায়। এভাবে শেষ হয় উপন্যাসের প্রথম চরণ।

দ্বিতীয় চরণ শুরু হয় ঢোঁড়াইয়ের জমি ও জিরাতের রাজ্যে আগমনের মধ্য দিয়ে। কোয়েরীটোলা। সেখানে দ্বন্দ্বগুলো আরো বড়ো, আরো প্রকট। বাবুসাহেব কীভাবে জমি-জিরাত একের পর এক দখল করতে থাকে, তার বিস্তর গল্প এসেছে। তার এক পুত্র মহাত্মা গান্ধীর কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে, আরেক ছেলে জমি ও গরু-মহিষের পাল দেখাশোনা করে। জনগণের অধিকার আদায়ের প্রতিটা আন্দোলন, প্রতিটা প্রচেষ্টা কী ধরনের অপকৌশল দিয়ে ভেস্তে দেওয়া হয়, কী ধরনের হয়রানি তাদের করা হয়, সেসবের কথাও উঠে এসেছে। জনগণের সাথে সাথে ঘুরে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে কীভাবে আবার জোতদারদের ঢাল হয়ে দাঁড়ায়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে বাবুসাহেবের এক ছেলে লাডলীবাবু।

উপন্যাসের শেষটা সকল পাঠককে চমকে দেয়, ঢোঁড়াইয়ের সাথে পাঠক-হৃদয়ও কেঁদে ওঠে। কংগ্রেসের হয়ে ভারত ছাড় আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে এখন পালিয়ে বেড়াতে হয়। এক সময় এন্টনি নামের এক কিশোর তাদের দলে আসে, তার পিতার নাম সামুয়র। তাহলে এই এন্টনিই কি ঢোঁড়াইয়ের রেখে আসা পুত্র? সমাধান পেতে পাঠককে আরো অপেক্ষা করতে হয়। এন্টনির প্রতি ঢোঁড়াইয়ের অতিরিক্ত টান সবাই লক্ষ করে। সে অসুস্থ হয়ে গেলে সেবার দায়িত্ব পায় ঢোঁড়াই, যে এই দলে রামায়ণজী নামে পরিচিত। এক সময় অসুস্থতা বাড়লে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে যায়। গিয়ে দেখে সে ঢোঁড়াইয়ের স্ত্রী রামিয়া নয়, অর্থাৎ এন্টনি ঢোঁড়াইয়ের ছেলে নয়, তবু কতটা সময় পিতৃস্নেহ দিয়ে আগলে রেখেছিল সে। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আত্মসমর্পণ করার জন্য এসডিও সাহেবের এজলাসের দিকে যেতে থাকে। তখনো তাকে নিয়ে কে কী মন্তব্য করবে, তা ভাবতে থাকে।

উপন্যাসে শ্রেণিবৈষম্য যতটা প্রকট, তার থেকেও শোষণ মুক্তির আকাঙ্ক্ষা আরো বেশি প্রখর। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড় আন্দোলনে প্রান্তিক মানুষের ভূমিকা বিস্তারিত এসেছে এ উপন্যাসে। ঢোঁড়াই কীভাবে ক্রমান্বয়ে এ আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে, তার বিস্তারিত গল্প জানা যায় উপন্যাসের পাতা উল্টালেই।

উপন্যাসে আত্মজৈবনিক উপাদান এসেছে অনেক। ঢোঁড়াইয়ের জীবনী মূলত লেখক সতীনাথ ভাদুড়ীর জীবনী। দীর্ঘদিন সতীনাথ কংগ্রেসে কাজ করেছে, শুধু কাজ হয়, পূর্ণিয়া জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলো। আভ্যন্তরীণ দলাদলি ও কোন্দলের চিত্র তুলে ধরেছেন, সতীনাথ ভাদুড়ী এই আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে একসময় কংগ্রেস ত্যাগ করেন। ঢোঁড়াইয়ের মাঝেও মহাৎমাজীর দল ত্যাগের কথা ভাবতে দেখা যায়।

রচনাশৈলীর দিক থেকেও অনন্য একটি গ্রন্থ ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’। নাম পুরুষে বর্ণিত হয়েছে ঘটনাবলি। এ কারণে কে কী ভাবছে, কী ভেবে কী করছে, তার বর্ণনা এসেছে। তুলসীদাশের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে অনেকবার। উদাহরণস্বরূপ, ‘করউঁ কাহ মুখ এক প্রশংসা’, অর্থাৎ একটিমাত্র মুখ দিয়ে তোমার আর কতটুকু প্রশংসা করতে পারি। কিংবা ‘কাহুহি বাদি ন দেইয় দোষু’, অর্থাৎ কাউকে মিছে দোষ দিও না। এমন উপদেশমূলক কিংবা বাস্তবতাকে চিত্রিত করতে অনেকবার তুলসীদাশের উক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

আঞ্চলিক প্রবাদ যেকোন সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই প্রবাদ অনেক এসেছে, এসেছে একেবারে আঞ্চলিক ভাষাতেই। উদাহরণস্বরূপ, ‘বুকের উপর মুগের দানা রগড়াচ্ছে’ অর্থাৎ পাকা ধানে মই দেওয়া অর্থে এ প্রবাদটি ব্যবহার করা হয়েছে। আবার, ‘পেট খারাপ করে মুড়ি আর ঘর খারাপ করে বুড়ি’ কিংবা ‘মরদের কথা আর হাতির দাঁত, টস থেকে মস হবার জো নেই সেখানে’ বা ‘চার কাঙলা, তো এক বাঙলা’ এমন অনেক প্রবাদের উল্লেখ রয়েছে উপন্যাসের পুরোটা জুড়ে।

উপন্যাসে লৌকিক ছড়া বা লোকছড়ার ব্যবহারও রয়েছে প্রচুর। যেমন :

‘না অন্য কোনো নাগর ছিল,
বলেই ফেল ছাই?
খুসুর ফুসুর খুসুর ফুসুর
কর কেনে?
অন্য কোনো নাগর বুঝ
ভাঁটবনেতে লুকিয়ে আছে?’

‘কর্মাধর্মার চাঁদনী রাতে
পাটের ক্ষেত নড়ছে কেন?
এতোয়ারীর সাদা মাথায়
চাঁদের আলো পড়ছে কেন?…
বড্ড বেশি নড়ছে যেন…’

‘গিয়েছে সে পুরুবে বাঙালা মুলুকে,
আমাকে ছেড়ে গিয়েছে আমার রাজা,
গিয়েছে করতে চাকরি,
নিশ্চয় শুখিয়ে হয়েছে লাকড়ি।
মরি মরি। হাঁটুর উপর রঙিন ধুতি,
কী শোভাই দিছিল!
ভাবলেই মন দিয়ে রস গড়ায়।
ওরে বিদেশী।
জানি তুমি এখন কার কথা শুনছ,
জানি কেন রোজেগারের পয়সা গুনছ,
নিশ্চয়ই তার জন্য কিনছ,
আঁটো আঁটো ফাটো ফাটো ‘চোলি’।
ওরে বিদেশী!’

বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর জন্য মায়েরা কোলের শিশুকে গান শোনাতো :

‘খোকন!
এতগুলো ভাত খাবে?
কেরান্টিতে যাবে?
ওরে হাতি দাম দে
ঘোড়ার লাগাম দে
কেরান্টিতে কাম দে।’

প্রতিটি সমাজে নির্দিষ্ট কিছু কুসংস্কার থাকে যেগুলো একসময় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়। এ উপন্যাসে তাৎমাটুলি ও কোয়েরিটোলার কুসংস্কারের বর্ণনা এসেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় :

‘এত বড় অমঙ্গলের সূচনা ধাঙড়টুলিতে আর কখনও আসেনি। বাঙ্গাবাঙ্গী’র নির্দেশ আছে পাড়ার বাঁশঝাড়ে ফুল ফুটলেই বুঝবে যে আকাল, না হয় দুঃসময় কাছে।’

এই কুসংস্কারের কারণে এই বাঁশঝাড়ের মালিক শনিচরা ও তার স্ত্রীকে ধাঙড়টুলি ছেড়ে চলে যেতে হয়। তাদের গ্রামছাড়া করে মহোতারা ভাবে- গ্রাম এবার শঙ্কামুক্ত হলো।

আবার কুসংস্কারকে কখনো কখনো জমি দখলের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে। ‘বুড়ো হাদাদার পাঁচ বছরের নাতিটা রক্তবমি করে দুদিনের জ্বরে মারা গিয়েছিল।’ অথচ এই মৃত্যুর কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় মোসম্মতকে। তার বেশ জমি-জায়গা আছে, কিন্তু তার জমি দখল না করলে বাবুসাহেবের বাড়ি থেকে প্রধান সড়কে উঠতে একটু সময়ের জন্য অন্য লোকের জমিতে পা রাখতে হয়। মোসম্মতের জমিটা দখলের ফন্দিফিকির দীর্ঘদিন থেকে করলেও বুড়হাদাদার নাতির মৃত্যুতে তা সহজ হয়ে যায়। বাড়হাদাদার নাতির মৃত্যুতে মোসাম্মতের প্রভাব রয়েছে, বিষয়টি প্রথমে গিধর উপস্থাপন করে। তখন কুসংস্কারাচ্ছন্ন বুড়হাদা, তার পুত্রবধু, এমনকি লছমিনিয়ার মা-সহ অনেকেই তার কথার যৌক্তিকতা ও প্রমাণ খুঁজে পায়। তারা বলে :

‘মোসম্মতের খাওয়ার পরও তার হেঁশেলে এক থালা ভাত ঢাকা থাকে। নিশ্চয়ই সেই যাদের নাম করতে নেই তাদের খাওয়ানোর জন্য।’

আবার কে যেন মোসাম্মতকে হাটের চৌরাস্তার বটগাছটার নিচে বসে থাকতে দেখেছে। এই অভিশাপ থেকে গাঁকে রক্ষার জন্য তারা মোসম্মতকে গ্রামছাড়া করতে চায়, দয়াপরবশ হয়ে দূরের এক উঁচু জমিতে বাড়ি করে দেয়। এভাবে কুসংস্কার কখনো কখনো শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলী উভয় দিক থেকেই ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ একটি অনন্য গ্রন্থ। কেন্দ্রীয় চরিত্র ঢোঁড়াই জীবনের শুরু থেকেই স্পষ্টভাষী এবং অধিকার সচেতন। সে নিষ্পেষিত প্রান্তিক মানুষের প্রতিভূ। প্রতিবাদ করতে কখনো কুণ্ঠিত হয়নি। রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছে, তাও অধিকার অর্জনের উদ্দেশ্যেই। তাই বলা যায়, ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ মূলত নিম্নবর্গের মানুষের অধিকার-সচেতনতার গল্প, সংগঠিত হয়ে নিষ্পেষনের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করার গল্প এবং ভারত থেকে ইংরেজ তাড়ানোর গল্প।

OneHost BD
সাফি উল্লাহ্

সাফি উল্লাহ্

কথাসাহিত্যিক ও প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা।

লেখকের অন্যান্য লেখা

বিজ্ঞাপন


সদ্য প্রকাশিত

রাত জাগার বৃত্তান্ত : যন্ত্রণা কিংবা মাদকতা
মুক্তগদ্য

রাত জাগার বৃত্তান্ত : যন্ত্রণা কিংবা মাদকতা

শামসুল কিবরিয়া
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১
0

ঘুমে চোখ জড়াতে জড়াতে হঠাৎ ভেঙে যায়, কোনোদিন বা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে করতেও ঘুম আসে না। নিত্যদিনের সংঘাতময় নাগরিক...

কাফকার ‘রূপান্তর’ : সমকালের নিরিখে পাঠ

কাফকার ‘রূপান্তর’ : সমকালের নিরিখে পাঠ

জুলাই ৩১, ২০২১
অভ্র আরিফের কবিতাগুচ্ছ

অভ্র আরিফের কবিতাগুচ্ছ

জুলাই ২৪, ২০২১
‘তোমারে যা দিয়েছিনু তা তোমারি দান; গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।’

‘তোমারে যা দিয়েছিনু তা তোমারি দান; গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।’

জুলাই ১৫, ২০২১
বিচিত্র স্বাদের গল্প : ‘বাইরে যার হাসির ছটা ভিতরে তার চোখের জল’

বিচিত্র স্বাদের গল্প : ‘বাইরে যার হাসির ছটা ভিতরে তার চোখের জল’

জুলাই ১৪, ২০২১
আলো ছায়ার খেলা

আলো ছায়ার খেলা

জুলাই ১১, ২০২১
OneHost BD

এ মাসের সর্বাধিক পঠিত

ঢোঁড়াই চরিত মানস : প্রান্তিক মানুষের জীবনালেখ্য ও অধিকার-সচেতনার গল্প
বইকথা

ঢোঁড়াই চরিত মানস : প্রান্তিক মানুষের জীবনালেখ্য ও অধিকার-সচেতনার গল্প

সাফি উল্লাহ্
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
0

জীবন অন্বেষী ভারতীয় ঔপন্যাসিক সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫) রচিত অল্প-পঠিত অথচ বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলীতে অনন্য উপন্যাস ‘ঢোঁড়াই চরিত...

শার্ল বোদলেয়ার : আধুনিক কবিতার পিতা

শার্ল বোদলেয়ার : আধুনিক কবিতার পিতা

জুলাই ১, ২০২০
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বিদায় অভিশাপ’ : উপেক্ষিত প্রাচ্য পুরাণ এবং একটি বিতর্কিত বিনির্মাণ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বিদায় অভিশাপ’ : উপেক্ষিত প্রাচ্য পুরাণ এবং একটি বিতর্কিত বিনির্মাণ

জুলাই ৯, ২০২০
নিছক গল্প নয়, জীবনের আধার রূপকথা

নিছক গল্প নয়, জীবনের আধার রূপকথা

আগস্ট ২২, ২০২০

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’ : নিষিদ্ধ কামনার ভিন্ন উপস্থাপন

জুলাই ৬, ২০২০
OneHost BD
লেখা পাঠানোর ঠিকানা ও যোগাযোগ
pratiswik2020@gmail.com
অলংকরণ : মাকসুদুল হাকিম

প্রকাশিত লেখার বক্তব্য সম্পর্কিত দায় সংশ্লিষ্ট লেখকের

Design by OneHost BD ©2020 সর্বস্বত্ব সংরক্ষণকারী প্রাতিস্বিক

কিছু পাওয়া যায়নি
সব লেখা দেখুন
  • হোম
  • লেখকসূচি
  • কবিতা
  • কথাসাহিত্য
    • গল্প
    • উপন্যাস
  • নাটক
  • প্রবন্ধ
  • বইকথা
  • গদ্য
    • মুক্তগদ্য
    • অন্যগদ্য
  • অনুবাদ
  • চলচ্চিত্র
  • চিত্রকলা
  • সাক্ষাৎকার
  • অনূর্ধ্ব ২৭
  • বিশেষ সংখ্যা
  • সাহিত্য সংবাদ

© 2020 সর্বসত্ব সংরক্ষকারী প্রাতিস্বিক.